জুলাই আন্দোলনে আহত ছাত্র-জনতাকে চিকিৎসা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আগত আট সদস্যের একটি চিকিৎসক দল। এই আট জনের ছয় জন ফিজিওথেরাপিস্ট আর বাকি দুজন অকুপেশনাল থেরাপিস্ট। মার্কিন এই চিকিৎসক দল বাংলাদেশে ১০ দিন থাকবে। তাদের চিকিৎসাসেবা পেয়ে খুশি জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে আহত ছাত্র-জনতা। তারা বলছেন, তাদের সেবা অনেক উন্নত। চিকিৎসার পাশাপাশি তারা মোটিভেশনাল স্পিচ দিচ্ছেন। এতে আহতরা মানসিক শক্তি লাভ করছেন। তাদের ব্যবহারও অনেক ভালো। জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) তৃতীয় তলায় চিকিৎসা গ্রহণকারী আহতদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
n
n
বর্তমানে নিটোরে ভর্তি আছেন ৯৬ জন আহত। বৃহস্পতিবার হাসপাতালের তৃতীয় তলায় গণঅভ্যুত্থানে আহতদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ডে প্রবেশ মুখেই দেখা যায়—আহতদের নিয়ে ব্যায়াম করাচ্ছেন বিদেশি থেরাপিস্টরা। আহতদের মুখে হাসি, তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অনেক ধরনের শারীরিক কসরত করছেন।
n
n
১৯ জুলাই রামপুরায় ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হওয়া আহত ইমন কবীর যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসক দলের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে। আমাদের দেশের চিকিৎসকদের সঙ্গে বিদেশি চিকিৎসক বলুন আর ফিজিওথেরাপিস্ট বলুন, আকাশ পাতাল তফাৎ। আমাদের দেশের ফিজিওথেরাপিস্ট বলুন আর চিকিৎসক বলুন তারা আমাদের কথাই শুনতে চান না। তাদের এত ব্যস্ততা। তাদের কথায় কোনো সহানুভূতি-সহমর্মিতা কিছুই থাকে না। আর আমেরিকান যারা এসেছেন, তাদের আচরণ সম্পূর্ণ বিপরীত। তাদের কথা শুনলেও ভালো বোধ করি, মন ভালো হয়ে যায়। তারা আমাদের সঙ্গে বসে চা খাচ্ছেন, হাসিখুশি আলোচনা করছেন। আমাদের সঙ্গে ফান করছেন।’
n
n
ইমন কবীর আরো বলেন, ‘এদের তত্ত্বাবধানে যদি আমরা থাকতে পারতাম, তাহলে সবচেয়ে ভালো হতো। কিন্তু সেই সুযোগ তো বেশি দিন পাব না!’ জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কেনান ইত্তেফাককে বলেন, ‘বর্তমানে নিটোরে ভর্তি ৯৬ জন আহতের চিকিৎসা দিচ্ছেন তারা। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমেরিকান বিশেষজ্ঞ টিমের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার কথা রয়েছে।’
n
n
তিনি জানান, ঐ হাসপাতালে ৮৮৭ জন আহত চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে গুলিতে আহত ৬৯৫ জন। অন্যান্য ছিল ২৯২ জন। গুলিতে আহত রোগীদের মধ্যে গুরুতর আহতদের ২১ জনের অঙ্গ কেটে বাদ দিতে হয়েছে। বাকি গুরুতর আহত যারা, যাদের হাত-পা হয়তো ৪০ থেকে ৫০ ভাগ সচল হবে, তাদের চিকিৎসা করা হচ্ছে। তাদের চিকিৎসার অংশ হিসেবে এই ফিজিওথেরাপিস্টরা কাজ করছেন। সাপোর্টিং ছাড়াই যেন তারা চলতে পারে সেই সেবাটা দেওয়া হচ্ছে।